ঘাস ফড়িং-এর শব্দ শোনা যায়-
অরুন্ধতী রায়

গণতন্ত্রের চেয়ে উত্তম জীবনব্যবস্থা আর কী আছে? যদি থেকেই থাকে, তবে কী তার স্বরূপ? গণতন্ত্রের সব উপাদান যদি আমরা জীর্ণ করে ফেলি তবে কী হবে আমাদের পরিনতি? 

গণতন্ত্র নিয়ে যত উচ্ছ্বাস, এটাই যেন আমাদের যেকোন ক্ষুদ্র-তুচ্ছ আশা-আকাঙ্ক্ষার মহৎ আশ্রয়স্থল, ব্যাক্তিস্বাধীনতা রক্ষার শেষ কবচ এবং আমাদের স্বপ্নময় উচ্চাশায় সঞ্জীবনীসুধা। যদি এমন হয় যে, এসব কিছুই সত্য নয়- আসলে গণতন্ত্র মেতেছে বিনাশের প্রলয় নাচনে, তা হলে?

শী-
হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড

হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের 'শী' ১৮৮৭ সালে প্রকাশিত হয়।'শী' প্রথমে Graphic ম্যাগাজিনে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।এটি আয়েশা সিরিজের প্রথম বই।
'আয়েশা' সিরিজের প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে।'শী' বইটিরও প্রচুর জনপ্রিয়তা আছে।তবে 'শী' এর কপালে অনেক সমালোচনাও জুটেছে।অনেকে বলেছে বইটি অনেক জায়াগায় একঘেয়ে হয়ে যায়,ঘটনাপ্রবাহ মন্থর হয়ে যায়।আবার অনেকে বলেছে হ্যাগার্ডের লেখনী অত্যন্ত বাজে।আবার অনেকের প্লটটাই বাজে লেগেছে।কেউ কেউ বলেছেন বইটি অত্যন্ত ভিক্টোরিয়ান।

নারী: কিশোরী থেকে বৃদ্ধা -
ডা. সুমন চৌধুরী

নারী শুধু কন্যা, জায়া, জননী রূপে সংসার আলো করেছেন তা নয়, জীবিকার সংস্থানেরও বহুক্ষেত্রে তারা সমানভাবে এগিয়ে আসছেন। এই পরিস্থিতিতে নারীদের নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতনতার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন নারীজীবনকে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভক্ত করে। শৈশব পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৈশোর আসে এবং বয়ঃসন্ধির রূপান্তর ক্রমে কিশোরীকে নিয়ে যায় যুবতীর পর্যায়ে। তখন নারী যেন কুড়ি থেকে পাঁপড়ি মেলে বর্ণ ও গন্ধে সকলকে মুগ্ধ করে ফুলের মতো ফুটে ওঠে। এভাবে প্রেম, বিবাহ, মাতৃত্বের নব-নব আবেষ্ঠনীতে মেয়েদের মনের ক্রমবিকাশ ঘটতে থাকে। পরে আবার প্রৌঢ়ত্বে এসে ঋতুবন্ধের সূচনা করে এবং বার্ধক্য ও জরা ধীরে ধীরে মানবজীবনের সমাপ্তির ইঙ্গিত জানাতে থাকে। নারী জীবনের মাতৃত্ব ও প্রজনন ক্ষমতা নিবৃত্তির পরেও নানা স্ত্রীরোগ এ পরিনত বয়সে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।সুতরাং বিভিন্ন বয়সের শারীরিক বিকাশের অবশ্যম্ভাবী প্রাকৃতির নিয়ম সম্বন্ধে কিছুটা ব্যবহারিক জ্ঞান সব নারীরই থাকা আবশ্যক। এই জ্ঞান তাদের জীবন পথে সাবলীলভাবে এগিয়ে চলার মতো মানসিক শক্তি যোগাবে।

নির্বাচিত প্রবন্ধ
আহমদ ছফা


লেখক অনেকেই হন, মনীষী লেখক আমরা তাঁদেরকেই বলি যাঁদের রচনায় একই সঙ্গে যুগ ও যুগান্তরের স্বপ্ন ও সাধনা মূর্ত হয়ে ওঠে। আহমদ সফা ছিলেন আমাদের দেশের সেরকম এক বিরল দৃষ্ট মনস্বিতাসম্পন্ন লেখক। লিপিকুশলতার সঙ্গে মনীষার এমন মণিকাঞ্চন যোগ সচারচর ঘটে না। সব লেখকের বেলায় তো নয়ই। আগমেদ সফা প্রজ্ঞা, মননশীলতা, অন্তদৃষ্টি, ইতিহাসবোধ, ঐতিহ্য সচেতনতা, মানবপ্রিতী, সামাজিক দায়বদ্ধতা তাঁকে সাহিত্যিক পরিচয়ের উর্ধ্বে আমাদের কালের এক চিন্তানায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।সাহিত্যের অন্যান্য শাখাতেও আহমদ ছফা তাঁর অতুলনীয় দক্ষতার পরিচয় দিলেও, তাঁর মনীষীর শ্রেষ্ঠ ফসল বোধ করি তাঁর প্রবন্ধগুলো। সেই প্রবন্ধ সম্ভার থেকে ৪৪টি প্রবন্ধ নিয়ে আহমদ সফার “নির্বাচিত প্রবন্ধ”

ভ্রমণসমগ্র
হুমায়ূন আহমেদ


হুমায়ূন আহমেদ বেড়াতে ভালোবাসতেন। বেড়ানোর জন্য সঙ্গী হিসেবে চাইতেন পরিবার কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের।তিনি মনে করতেন বেড়ানোর আনন্দ এককভাবে উপভোগের নয়।দেশ-বিদেশের বহু জায়গায় তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন।এইসব ভ্রমণের কিছু কিছু গল্প তিনি লিখেছেন তাঁর ছয়টি ভ্রমণ-বিষয়ক গ্রন্থে।গ্রন্থগুলো হলো ‘পালের তলায় খড়ম,’ ‘রাবণের দেশে আমি এবং আমরা,’ ‘দেখা না-দেখা,’ ‘হোটেল গ্রেভার ইন,’ ‘মে ফ্লাওয়ার’ ও ‘যশোহা বৃক্ষের দেশে।’ হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের মতো তাঁর ভ্রমণোপাখ্যানগুলোও পাঠকপ্রিয়তায় ধন্য। তাই আশা করা যাচ্ছে, তাঁর ভ্রমণবিষয়ক সমস্ত রচনার সংকলন এই ভ্রমণসমগ্র পাঠকদের ভালো লাগবে। ভূমিকা প্রিয়জনের নিয়ে বেড়াতে পছন্দ করতে হুমায়ূন আহমেদ। বেড়ানোর সময়কার খুব সাধারণ গল্পকেও অসাধারণভাবে বর্ণনা করতেন তিনি।আর উদ্ভট কিছু ঘটনাও যেন অপেক্ষা করত হুমায়ূন আহমেদের জন্যে।তাঁর অনেকগুলি ভ্রমণেরে সঙ্গী আমি।পরে যুক্ত হয়েছে একে একে নিষাদ ও নিনিত। ভ্রমণ থেকে ফিরে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা বলছেন, আর তাঁর বন্ধুশ্রোতারা কখনো হেসে গড়িয়ে পড়ছে আবার কখনো দেখা যাচ্ছে তাদের চোখের কোনায় পানি; এটি ছিল ‘দখিন হাওয়া’র অতি পরিচিত দৃশ্য।যারা কাছ থেকে তাঁর বেড়ানোর গল্প গুনেছেন শুধু তারাই জানেন কত চমৎকার করেই না সেসব গল্প বলতেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বইগুলি একত্রিত হচ্ছে। আর হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন এক অচেনা ভ্রমণে। প্রিয়জনদের ছাড়াই, একা।তাঁর এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা যদি তাঁর কাছ থেকে জানতে পারতাম! মেহের আফরোজ শাওন দখিন হাওয়া ১৩.০১.২০১৩ সূচিপত্র *পায়ের তলায় খড়ম *রাবণের দেশে *আমি এবং আমরা *দেখা না-দেখা *যশোহা বৃক্ষের দেশে *মে ফ্লাওয়ার *হোটেল গ্রেভার ইন.

নিঃসঙ্গ সম্রাট
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


বরানগরের কাছে বি টি রোডের ধারে একটা লালচে রঙের দোতলা বাড়ির প্রায়ন্ধকার ঘরে অস্থির ভাবে পায়চারি করছেন এক প্রোঢ়। তাঁর মুখের চরুরুটের আগুন ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে তাঁর ভ্রম হয়, যেন নতুনভাবে সাজানো মঞ্চে সহসা জ্বলে উঠেছে পাদপ্রদীপের আলো । কানে আসছে দর্শকের উচ্ছ্বাস। সহসা তাঁর ভুল ভাঙে। তিনি উচ্চারণ করেন : ‘ইট ইজ দ্য কজ, মাই সোল....../হোয়াইট ইজ দা কজ?’ এই মানুষটির নাম শিশিরকুমার ভাদুড়ী । বাংলা রঙ্গমঞ্চের মুকুটহীন সম্রাট। অভিনয়ে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। একথা আপামর দর্শকই শুধু নয়, রঙ্গমঞ্চে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষরাও মানতেন। অভিনয়ে তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারেন দেশি-বিদেশি সব দর্শককে। কিন্তু অভিনয় নয়, তাঁর বেদনা অন্যখানে। শিশিরকুমারের স্বপ্ন ছিল, বিদেশি প্রকরণের শৃঙ্খল থেকে বাংলা নাটককে মুক্ত করে, তাকে তার নিজস্ব ভূমিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবেন। অথচ যতবার নতুন কিছু করতে চেয়েছেন, দর্শকরা প্রত্যাখ্যান করেছে। শিল্পের কাছে সৎ থাকতে গিয়ে ব্যবসার দিকটি সামলাতে পারেননি। ক্রমশ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। বরানগরের ওই বাড়ির শেষ আশ্রয় থেকেও আজ দূর করে দেওয়া হচ্ছে তাকে। সন্ধ্যার অন্ধকারে নিরাভরণ ঘরটিতে একরাশ বই, রবীন্দ্রনাথ-শেকস্‌পিয়রের পঙ্‌ক্তি আর কঙ্কারবতীর স্মৃতি নিয়ে নির্জন ঘরে তাঁর রাজকীয় পদচারণা। সেই কঙ্কাবতী, যে তাঁর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছিল। কিন্তু মাত্র বাইশ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে তার খেদোক্তি শিশিরের ভাইয়ের কাছে, তোর দাদা কিছুতেই আমাকে বিয়ে করলেন না। .. এক বর্ণময় জীবন নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক ও অনন্যসাধারণ উপন্যাস ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’।